১৯৭১ এ নতুন বাংলাদেশ জন্ম নেবার পরবর্তী ঘটনা। ভারত বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এক গ্রাম গড়বন্দীপুর। এই সীমান্তপটে এক নারীর মর্মান্তিক করুণ কাহিনী এই নাটক। গ্রামের লোক একে দেখেছে যেন জ্যোৎস্না দিয়ে গড়া, নাম দিয়েছে জোছনাকুমারী। গ্রামের দুই বন্ধু বাবাজি ও ত্রিলোচন ভ্যান রিকসা চালায়, অবসর সময়ে মনের আনন্দে বাবাজি গান গায় আর ত্রিলোচন খোল বাজায়। বাবাজি আবার ত্রিলোচনের বাড়িতেই আশ্রিত। ত্রিলোচন একদিন ঝোপঝাড় জঙ্গলের মধ্যে পড়ে থাকা জোছনাকুমারীকে দেখে বাড়িতে আনে।

সীমান্তের গ্রামে নানা লোভ, অর্থ লালসা মানুষের নিত্য যাপনের চিত্র। গ্রামের লোক এই মেয়েটিকে ডাইনি সাব্যস্ত করে, আর গ্রামের মস্তান তাকে বিক্রি করে দেবার ফন্দি ফিকির করে। ত্রিলোচনের স্ত্রী জ্যামনি এই অসহায় মেয়েটিকে বাঁচানোর চেষ্টা করে, বাবাজি তাকে বিয়ে করার প্রস্তাব দেয়! ত্রিলোচনের বাড়িতে খন্ডযুদ্ধ, গ্রামের নতুন চিকিৎসক এসে পাশে দাঁড়ায়। ত্রিলোচন জোছনাকুমারীকে নিজের মেয়ে মনে করে ভালবাসে,- কিন্তু সে হিন্দু না মুসলমান! কখনও নাম বলে বীনা, আবার কখনও ফতিমা! বারবার ভয়ঙ্করভাবে ধর্ষিতা এই নারীর আর্তনাদ: খা, খা, আমাকে খাবি? খা!

সীমান্তের ফৌজ, পুলিশ ও নানা মানুষের জড়িয়ে পড়া এই ঘটনায় সভ্যতার নগ্ন চেহারা আমাদের সামনে ফুটে ওঠে।

কিন্তু মাটির পৃথিবীর রক্তাক্ত মেয়েই আবার আকাশে এক জ্যোৎস্নামাখা অপার্থিব নারী।
সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় লিখেছিলেন : “আলো হাওয়া অন্ধকার আর নারীর জন্য নিরন্তর জুয়োখেলা চলছে এই পৃথিবীতে- ” আজও তার শেষ নেই! -এর শেষ কোথায়!

Share Event: