দায় আমাদেরও

দায় আমাদেরও

  • 04 May, 25
  • 03:00 PM - 05:00 PM
  • Academy of Fine Arts: Kolkata
  • দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ। অক্ষশক্তি পর্যুদস্ত। জয় হয়েছে মিত্র শক্তির। পৃথিবী বিধ্বস্ত, শুধু এক সোভিয়েত ইউনিয়নেই প্রাণ হারিয়েছেন প্রায় তিন কোটি মানুষ। অগণিত মৃত্যু হয়েছে বিভিন্ন কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পে। সান ফ্রান্সিসকো কনফারেন্সে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রুম্যান ঘোষণা করেছেন এক যে মিলিটারি ট্রাইব্যুনাল তৈরি হয়েছে, যার সদস্য গ্রেট ব্রিটেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স ও সোভিয়েত ইউনিয়ন। এই ট্রাইব্যুনাল মিত্র বাহিনীর হাতে ধরে পড়া সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ নাৎসি নেতাদের বিচারে বসেছে ও বারোজনের ফাঁসীর নির্দেশ দিয়েছে (১৯৪৬)।  বিচার সভা বসে নুরেমবার্গ শহরের ‘প্যালেস অফ জাস্টিস’-এ। নুরেমবার্গ শহরকে বাছার কারণ কিছুটা প্রতীকী। এক তো এখানে খুব গুরুত্বপূর্ণ সব নাৎসি র‍্যালি হয়েছে, আর দ্বিতীয়ত যে জাতিভেদের আদর্শের ওপর নাৎসিবাদ দাঁড়িয়ে সেই কুখ্যাত নুরেমবার্গ ল্য(১৯৩৫)-এর এটা পীঠস্থান। এই বিচারের পর কথা হয়েছিল আরেকটি বিচার অনুষ্ঠানের যাতে জার্মান শিল্পপতিদের বিচার হবে, কিন্তু  ট্রাইব্যুনালের সব সদস্য দেশ তাতে একমত হতে না পারায় সে বিচার হয় নি। 
  • কিন্তু এরপরেও বারোটি আলাদা বিচার সভা বসে ওই প্যালেস অফ জাস্টিসেই। বিচারের ভার আর আন্তর্জাতিক মিলিটারি ট্রাইব্যুনালের হাতে ছিল না। এই বারোটি বিচার সভা বসায় মার্কিন মিলিটারি কোর্ট। এর মধ্যে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ হল ‘চিকিৎসকদের বিচার’(১) ও ‘বিচারকদের বিচার’(৩)। এই তিন নম্বর বিচারটির ওপরেই এ নাটক আধারিত। এ্যাবি ম্যান রচিত চিত্রনাট্য ‘জাজমেন্ট এ্যাট নুরেমবার্গ’ এ নাটকের টেক অফ পয়েন্ট। মূলের সাথে মিল ও অমিল দুইই অনেক। এখানে যে তিনজন বিচারকের বিচার হচ্ছে তাঁরা হচ্ছেন এমিল হান, হফস্টেটার ও আরনস্ট জেনিঙ। এই শেষোক্ত ব্যক্তই বিশেষ আলোচনার দাবী রাখেন। তিনি পণ্ডিত, তাঁর লেখা বই বিভিন্ন দেশে আইনের ক্লাসে পড়ানো হয়, তিনি ছিলেন ফুরারের আইন সভার সম্মানিত ও সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। আর সব থেকে বড় কথা তিনি একজন বিবেকবান মানুষ। কিন্তু এতদ সত্বেও তিনি নাৎসিদের সঙ্গ ছাড়েন নি, বিভিন্ন নাৎসি কুকীর্তিতে অংশ নিয়েছেন এবং এখন বুঝছেন কি ভুল তিনি করেছেন।
  • যুদ্ধে এক দল হয়ে বিজয়ী, এক দল হয় বিজিত, আর বিজয়ীরা সব সময়েই বিজিতদের তোলে আসামীর কাঠগড়ায় এর মধ্যে নতুন কিছু নেই। যদি যুদ্ধের ফলাফল এর উলটো হত হয়ত এর বিপরীত এক বিচার সভা বসত। কিন্তু তাহলে ইতিহাস পাঠ কেন বা এই নাটকই বা কেন?
  • কোন শাসকের শাসন ক্ষমতা দখল বা স্বৈরাচারী হয়ে ওঠা কোন দুর্ঘটনা নয়, বা কোন দৈবের নির্দেশে তা হয় না। হিটলারের উত্থান তো অবশ্যই কোন দুর্ঘটনা নয়। এই উত্থান, তাঁর অসাধারণ জনপ্রিয়তা, সবটাই ঘটেছে একটি প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে। আর সেই পুরো প্রক্রিয়ায় অনুঘটকের কাজ শুধু তাঁর কাছের বা দেশের মানুষ করে নি, আন্তর্জাতিক স্তরে অনেকে নিজেদের ক্ষুদ্র স্বার্থ সিদ্ধি করতে সে প্রক্রিয়ায় সামিল হয়েছে। তারপর যেমন একদিন জার্মানির আপামর জনসাধারণ যেন কোন কালঘুম থেকে উঠে বুঝতে পেরেছে তাঁরা কী ভুল করেছিলেন, ঠিক তেমনই এই সব বিদেশী রাষ্ট্রও একদিন তাঁদের ভুল বুঝতে পেরেছে। তবে তখনই তাঁরা বুঝেছেন যখন তাঁদের ঘরে আগুণ লেগেছে, তার আগে নয়। আর তখন বড় দেরী হয়ে গিয়েছে।
  • যাঁকে তাঁরা অস্ত্র বিক্রি করে মুনাফা লুটেছেন সেই অস্ত্র তখন ধেয়ে আসছে তাঁদেরই দিকে। যাঁকে স্বীকৃতি দিয়েছেন পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ নেতার সেই নেতা তখন পরিকল্পনা করছেন সে দেশকে কিভাবে শ্মশান বানানো যায়। তখন তাঁরা যুদ্ধ করেন, ট্রাইব্যুনাল বসান। এই ট্রাইব্যুনালে শুধু চারটি সদস্য দেশ ছিল না, আরও উনিশটি দেশের প্রতিনিধি এই ট্রাইব্যুনালকে সমর্থন করেছিলেন। হিটলার নামক ফ্র্যাঙ্কেনস্টাইনের উত্থানে এক দিন এদের সকলেরই কম বেশী ধনাত্মক ভূমিকা ছিল।
  • আর এই যে বৃহৎ ব্যবসা ও তার সাথে জড়িয়ে অতি বৃহৎ রাজনীতি এর বলি হচ্ছেন সাধারণ মানুষ, কেউ বা কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পে, কেউ শত্রু বেষ্টিত লেনিনগ্রাদে, কেউ ড্রেসডেনের কার্পেট বোম্বিং-এ আবার কেউ সুদূর নাগাসাকিতে।
  • যেহেতু কোন স্বৈরাচারীকে খুব একটা নিয়ম কানুন মেনে কাজ করতে হয় না, বা কারও সাথে আলোচনা বা অন্য কারও মতের তোয়াক্কা সে করে না, সে অনেক কিছু করতে পারে তুলনামূলক ভাবে অনেক তাড়াতাড়ি। এর মধ্যে তথাকথিত উন্নয়ন মূলক কাজও পড়ে। মানুষ এই চট জলদি পেয়ে যাওয়াকে মনে করে মস্ত নেতার লক্ষণ। যেহেতু সামগ্রিক পরিস্থিতি বিচার করা তাঁদের পক্ষে সব সময় সম্ভব হয় না, তাই এই মনোভাবের জন্য তাঁদের দোষও দেয়া যায় না। অন্য দেশের ব্যবসায়ী বা রাজনীতি ব্যবসায়ীদের ক্ষেত্রে কিন্তু ব্যাপারটা এত সরল নয়। সেখানে সাদা কালোর ভাগের মধ্যে আরও অনেক রঙ আছে। আর তা যে আছে তা শুধু হিটলারের উত্থান নয়, হিটলারের পতনের পর এই বিচারেও খুবই পরিষ্কার।
  • একটা যুদ্ধ, তা যতই বড় হোক না কেন, তা একদিন শেষ হয়ে যায়। কিন্তু যা শেষ হয় না তা হল সেই মানসিকতা, সেই লোভ যা ছিল ওই যুদ্ধের কারণ। আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে বিচার হয় নাৎসি নেতাদের, অনেকের ফাঁসী হয়। বিচারকের বিচারে কিন্তু সেরকম কোন পরিণাম হয় নি। সেই কারণেই হয় নি যে কারণে এই আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল নাৎসি জামানার ব্যবসায়ীদের কোন বিচার সভা বসায় নি। অর্থাৎ বিশ্বকে বোঝানো দরকার নাৎসিবাদ খারাপ, আমরা  তার নেতাদের শাস্তি দিয়েছি। এবং একই সাথে জার্মান দেশের সাথে মৈত্রী দরকার কারণ জার্মান প্রযুক্তি ও জার্মানিতে ব্যবসা। ও দরকার যুদ্ধ পরবর্তী পৃথিবীর ওপর প্রভুত্ব।
  • নেতার নাম পালটে যাবে, দুরভিসন্ধি থাকবে একই। তাহলে মানুষের বাঁচার রাস্তা কোথায়? বাঁচার রাস্তা একটাই। চোখ খোলা রাখা, নিজের বুদ্ধিকে অন্যের জিম্মায় দিয়ে ‘কমফোর্ট জোন’-এ না বাঁচা। ভাবা ‘প্র্যাকটিস করা’। তাহলেই ভুল পায়ে মানুষ মাথা রাখবে না, তৈরি হবে না কোন স্বৈরাচারী।
Share Event:

Venue: Academy of Fine Arts

  • Platinum @ ₹500

    Stock:: 32 seats

  • Premium @ ₹400

    Stock:: 40 seats

  • Gold @ ₹300

    Stock:: 38 seats

  • Silver @ ₹200

    Stock:: 70 seats

  • General @ ₹100

    Stock:: 117 seats

Platinum₹500
Premium₹400
Gold₹300
Silver₹200
General₹100

Venue

Academy of Fine Arts

2, Cathedral Road Kolkata

Organizer & Others

  • Organizer:প্রাচ্য
  • Director: বিপ্লব বন্দ্যোপাধ্যায়
  • Writer:সুমন্ত্র চট্টোপাধ্যায়
  • Artists:দেবশংকর হালদার, সুপ্রিয় দত্ত ও বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী, বুদ্ধদেব দাস

RELATED EVENTS

মহাভারত ২
  • 05 May, 25
  • 06:00 PM - 09:00 PM
  • Academy of Fine Arts
    2, Cathedral Road Kolkata
Book Now
গোরুর গাড়ির হেডলাইট
  • 09 May, 25
  • 06:15 PM - 08:30 PM
  • Academy of Fine Arts
    2, Cathedral Road Kolkata
Book Now
ম্যাকবেথ
  • 17 May, 25
  • 03:00 PM - 05:00 PM
  • Academy of Fine Arts
    2, Cathedral Road Kolkata
Book Now
ধৃতিমান
  • 23 Apr, 25
  • 06:30 PM - 08:30 PM
  • Academy of Fine Arts
    2, Cathedral Road Kolkata
Book Now